নাইরান নাজমুল: ইলুমিনাতি। নামটার সাথে পরিচিত নয় এমন পাঠক পাওয়া যাবে না। যেখানেই আছে রহস্য কিংবা চক্রান্তের গন্ধ সেখানেই যেন ইলুমিনাতিকে খুঁজে পায় অনেকে। ষড়যন্ত্রতত্ত¡ আর ইলুমিনাতি যেন একই মুদ্রার দুটো পিঠ। কিন্তু কী এই ইলুমিনাতি? কীভাবেই বা তারা এলো? কতটুকই বা কঠিন বাস্তব আর কতটুকুই বা কল্পনা?
পৃথিবীর প্রতিটি বিষয় অনেক রহস্যে ঘেরা। বিশ্বের মধ্যে অনেক গোপন সংগঠন রয়েছে। সবচেয়ে সুপরিচিত গোপন সংগঠনের মধ্যে একটি হল ইলুমিনাতি। ১৭৭৬ সালে, অ্যাডাম ওয়েসস্পট নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জার্মান রাজ্যের বাভারিয়ায় ইলুমিনাতি নামে একটি গুপ্ত সংঘ গড়ে তোলেন। এর উদ্দেশ্য ছিল সমাজ থেকে তথাকথিত কুসংস্কার দূর করা একইসঙ্গে জনজীবনে ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় প্রভাব হ্রাস করা। ইলুমিনাতি শুরু থেকেই একটি গোপন সংগঠন। তাদের প্রধান কাজ অন্যায় অনুশীলন। আর তাদের সঙ্গে যোগ দেয় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রভাবশালী ব্যক্তি। ইলুমিনাতি আগের সংগঠন থেকে শুরু করে এক বা অন্য শয়তানের উপাসনা পর্যন্ত পরিচালনা করছে। এই সংগঠনের সবাই শয়তানকে তাদের প্রভু হিসেবে মেনে নিয়েছে। তারা শয়তানের উপাসনার মাধ্যমে বিভিন্ন স্বার্থের পেছনে ছুটছে। ইলুমিনাতির সবচেয়ে পরিচিত চোখের চিহ্নগুলোর মধ্যে একটি হলো পবিত্র কুরআন অনুসারে দাজ্জালের চিহ্ন এবং বাইবেল অনুসারে খ্রিস্টান বিরোধী চিহ্ন। সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি তাদের মূল লক্ষ্য। তারা বিশ্বাস করতো পৃথিবীতে যখনই বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে তখনই তাদের দেবতা দজ্জাল বা যিশুখ্রীষ্ট আবির্ভূত হবে। দ্য ইলুমিনাতি গঠনের পেছনে সে সময়ের আরেকটি গুপ্ত সংগঠন ফ্রি ম্যাসন অনেক প্রভাব ফেলেছিলো। ফ্রি ম্যাসন মধ্যযুগের একটি গোপন সংগঠন। তারা অশুভ আত্মার উপাসক ছিলো। ইলুমিনাতি দ্বারা ফ্রি ম্যাসন অনেক প্রতীক সমানভাবে ব্যবহৃত হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় প্রতীক প্রকাশ্যে ইলুমিনাতি প্রতীক বহন করে। এই প্রতীক থেকে ইলুমিনাতির মূল উদ্দেশ্য জানা যায়। সিলমোহরের একপাশে ঈগল পাখি এবং অন্য পাশে একটি পিরামিড এবং একটি চোখের ছবি। এক চোখের চিহ্ন হলো মেসনিক সূর্য দেবতা দি বস। ১৩ সংখ্যাটি পশ্চিমা সংস্কৃতিতে দুষ্ট শয়তানের প্রতীক। এই চিহ্নটিতে ১৩ সংখ্যাটি বারবার ব্যবহৃত হয়েছে। প্রতীকে ১৩টি তারা রয়েছে, ঈগলের ডান মুষ্টিতে ১৩টি জলপাই পাতা, বাম মুষ্টিতে ১৩টি তীর এবং মধ্যঢালে ১৩টি ডোরা রয়েছে৷ প্রতীকের লেখাটি নির্দেশ করে যে তাদের দেবতা একটি ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্ব গড়ে তোলার প্রকল্পটিকে সমর্থন করেছ। ইলুমিনাতি-এর এজেন্টরা একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরি করতে যাচ্ছে যেখানে ধর্মনিরপেক্ষতা বিরাজ করবে, যার অর্থ হল প্রত্যেকে তাদের ঈশ্বরের পরিবর্তে শয়তানের উপাসনা করবে। তাদের এই প্রকল্প শেষ হলে একচোখা দাজ্জাল দুনিয়াতে আসবে। তারা দ্য ইলুমিনাতির এই কাজগুলোকে মুক্তচিন্তা হিসেবে প্রচার করে। তারা মনে করে যে সমস্ত ধর্মগ্রন্থ ভুল হতে পারে কিন্তু তাদের মতবাদ এবং তাদের কাজ কখনো ভুল হতে পারে না। তাদের উদ্দেশ্য হলো এমন কিছুর সাথে জড়িত হওয়াÑ যা এই দিন এবং যুগে সমাজ অন্যায় করবে না। আমরা প্রতিনিয়ত ইলুমিনাতির জাদুতে আটকে আছি। কিন্তু আমরা তা অনুধাবন করতে পারি না। বিশ্বের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি শুধুমাত্র শয়তানের উপাসনা করেই সফলতা অর্জন করেছেন। ইলুমিনাতি সম্পর্কে তথ্য জেনে আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকব।
সমাজ বিশ্লেষকদের মতে নতুন পৃথিবী গড়া তাদের মূল লক্ষ্য হলেও আপাতদৃষ্টিতে তারা ধর্মীয় কুসংস্কারাচ্ছান্ন সমাজের বিরুদ্ধে গুপ্তভাবে সোচ্চার ছিলো। বিশেষভাবে ধারণা করা হয় মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার ধর্মীয় নৈতিক স্খলনগুলো এদের দ্বারাই প্রকাশ্যে আসে। যেমন ধরা যাক হিন্দুধর্মের একটি বিলুপ্ত কুসংস্কার হল সতীদাহ প্রথা। এই একবিংশ শতাব্দীতেও এমন কোনো ঘটনা হয়ত ঘটবে তাও আবার ওই ধর্মের কোনো এক পুরোহিতের (PRIEST) দ্বারা। এই সম্পূর্ণ ঘটনা এবং এর বিরুদ্ধে জনমত উত্থাপনে এদের প্ররোচনাকে অনেকেই কলকাঠি হিসেবে ধারণা করে। কিছু বিশেষজ্ঞ এরকম সংগঠনকে এবং এদের কার্যক্রমকে কাল্পনিক মনে করে।
তবে নতুন করে বর্তমান সময়ে এটি আবার আলোচিত হতে শুরু করেছে ড্যান ব্রাউন এর ‘অ্যাঞ্জেলস অ্যান্ড ডিমনস’ উপন্যাসের মাধ্যমে। মানুষ মনে করে থাকে ইলুমিনাতি সদস্যরা পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করে। তবে তার কোনো বাস্তব প্রমাণ নেই।
ইলুমানিতির জন্ম
১ মে, ১৭৭৬ সালে, জার্মানির দক্ষিণপূর্বের রাজ্য ব্যাভারিয়াতে একটি নিষিদ্ধ গুপ্ত সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। সেখানের ইঙ্গলস্ট্যাড ইউনিভার্সিটির ‘ক্যাথলিক গির্জা আইন’ বিভাগের প্রথম প্রফেসর অ্যাডাম ওয়েশপ্ট (Adam Weishaupt) এই সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইউনিভার্সিটিটি তখন সম্পূর্ণই জেসুইট প্রভাবিত ছিল, অর্থাৎ পুরোই খ্রিস্টীয় আইনকানুন মেনে চলতো। সেখানে যার খ্রিস্টধর্মের প্রতি আনুগত্য কিছুটা কম তাকেই পোহাতে হত নানা সমস্যা। অ্যাডাম তখন চিন্তা করলেন এমন এক গুপ্ত সংঘের যার মাধ্যমে তিনি সমাজকে নতুন পথে চালনা করতে পারবে।
একইসময়ে ফ্রিমেসনরি নামে আরো একটি গুপ্ত সংঘ ছিলো। অ্যাডাম দেখলেন ফ্রিমেসনদের সাথে যোগ দেয়াটা অনেক খরচের ব্যাপার। তাছাড়া তার নিজের ধ্যানধারণার সাথে এই সোসাইটির কর্মকান্ড সাংঘর্ষিক। তাই তিনি নিজের ধ্যানধারণা মোতাবেক এক সংঘ খুলে বসার পরিকল্পনা করলেন, আর তাতে থাকবে ফ্রিমেসনদের মতন ধাপে ধাপে উর্ধ্ব র্যাংকিং-এর সিস্টেম। প্রথমে তিনি তার সংঘের নাম রাখলেন (Bund der Perfektibilisten) বাউন্ড দ্যা পারফেক্টবিলিস্টিন; অ্যাডাম আর তার চার ছাত্র মিলে এই সংঘ শুরু করলেন। আর ‘আউল অব মিনার্ভা’ ছিলো তাদের প্রতীক।
অ্যাডাম সদস্যদের জন্য ছদ্মনামের ব্যবস্থা করলেন। অ্যাডামের নিজের নাম হলো স্পার্টাকাস। তার ছাত্র (Massenhausen) মোসেনহোসেন এর নাম হলো অ্যাজাক্স, Merz-এর নাম হলো অ্যাগাথন আর Sutor-এর নাম হলো ইরাসমাস রোটারোডেইমাস। কিন্তু Sutor-কে তিনি পরে বহিষ্কার করেন, কারণ সে ছিল অলস।
১৭৭৮ সালের এপ্রিল মাসে এয় সংঘের নাম পরিবর্তন করে নাম রাখা হলো ইলুমিনাতি। যার অর্থ ‘যারা কোনো বিষয়ে বিশেষভাবে আলোকিত বা জ্ঞানার্জনের দাবী করে’। সে সময় সংঘের সদস্য ছিল ১২। কিন্তু পরবর্তীকালে এই সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৭।
সাধারণত সুপরিচিত বুদ্ধিজীবী, সচ্চরিত্র খ্রিস্টানরা হতো এই সোসাইটির সদস্য এবং সকল প্রকার ইহুদি আর মূর্তিপূজা ছিল নিষিদ্ধ। এমনকি নারী, ধর্মগুরু এবং অন্য গুপ্ত সংঘের সদস্যরাও নিষিদ্ধ ছিল। ধীরে ধীরে ইউরোপজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে লাগল ইলুমিনাতির শাখা। পরবর্তীকালে ইলুমিনাতির অভ্যন্তরে ধর্মবিদ্বেষ চোখে পড়তে লাগল।
১৭৮২ সালের দিকে ইলুমিনাতি-তে তিনটি শ্রেণির সূচনা করা হয়। প্রথম শ্রেণিতে সে সকল সদস্যকে রাখা হলো যারা নতুন নতুন এই সোসাইটিতে যোগ দিয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণিতে রাখা হলো তাদের থেকে একটু উচ্চ পর্যায়ের যারা রয়েছে। আর তৃতীয় শ্রেণিতে রাখা হলো সেই সকল সদস্যকে যারা গোপনীয় জ্ঞানের অধিকারী।
১৭৮৪ সালের শেষে, মোট সদস্য হয়ে যায় ৬৫০! যদিও অ্যাডাম দাবি করেন সংখ্যাটা আড়াই হাজার। তবে অ্যাডাম চেয়েছিলেন ইলুমিনাতি গুপ্ত সংঘের কথা খুবই গোপন রাখতে যেন ঘুণাক্ষরেও রসিক্রুসিয়ানরা তা না জানে। রসিক্রুসিয়ান হলো আরেক গুপ্ত সঙ্ঘ যারা ইলুমিনাতির পুরোটাই বিপরীত। কারণ ইলুমিনাতি বিশ্বাস করত ধর্মনিরপেক্ষতায়, আর রসিক্রুসিয়ানদের বিশ্বাস করতো জাদুবিদ্যাতে।
ইলুমিনাতি থেকে তাহলে কিভাবে সদস্য রিক্রুট করা হতো? সেটা হতো একদম নীরবে আর গোপনে। ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগের মাধ্যমে। কিন্তু তারপরেও রসিক্রুসিয়ানরা জেনে গেলো। ফলাফল দাঁড়ালো- ইলুমিনাতি যে একটি নাস্তিক সংঘ, সেটা রটে গেল ইউরোপে। ধর্মহীন ইলুমিনাতির বিরুদ্ধে জোর গণমত গড়ে উঠল।
ব্যাভারিয়ার শাসক চার্লস থিওডোর ভয় পেয়ে গেলেন। তার সরকার সকল গুপ্ত সংঘ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল। এই ব্যান আসলো ১৭৮৫ সালের ২ মার্চ। অ্যাডাম পালিয়ে গেলেন আর ইলুমিনাতির প্রচুর নথিপত্র সরকারের হাতে এসে গেল। দু’বছর বাদে সরকার সেটা প্রকাশও করে দিল। এরপর যে ইলুমিনাতির কী হলো তা আর জানা যায়নি।
১৭৯৮ সালের কিছু আগে জন রবিসন নামে Proofs of a Conspiracy নামে একটি বই লিখেন যেখানে দাবি করা হয় ইলুমিনাতি এখনও বেঁচে আছে, বহাল তবিয়তে। অসম্ভব জনপ্রিয় হয় সে বই এবং আরেকটা বই যেখানে একই দাবি করা হয়। দুটো বই প্রচুর বিক্রি হয়। বইতে বলা হয় অষ্টাদশ শতকের শেষ ভাগের সেই ফ্রেঞ্চ বিপ্লবের পেছনের কলকাঠি নাকি আসলে ইলুমিনাতিই নেড়েছে। এ বই দুটো সমুদ্র পাড়ি দিয়ে পৌঁছে যায় নতুন আমেরিকাতেও। সেখানে রেভারেন্ড মোর্স ও অন্যান্যরা প্রচার করলেন ইলুমিনাতির বিরুদ্ধে। কিন্তু এই হুজুগ কমে গেল ১৮০০ সালের পর পর। মাঝে মাঝে অবশ্য মেসন-বিরোধী আন্দোলন মাথাচাড়া দিয়ে উঠত বটে।
সেই যে বই দুটো দাবি করেছিল ইলুমিনাতি বেঁচে আছে, শতাব্দীর পর শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও সে মতবাদ রয়ে যায়। এক নজরে দেখে নেয়া যাক কী কী ষড়যন্ত্র তত্ত্ব প্রচলিত আছে ইলুমিনাতির নামে-
১) প্রচুর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মতে, শক্তিমান সিক্রেট সোসাইটি ইলুমিনাতি মূলত এ বিশ্বের সকল প্রধান ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করে। ২) ফ্রেঞ্চ বিপ্লবের সূচনাও ইলুমিনাতির হাতেই। ৩) নেপোলিয়নের ওয়াটারলু যুদ্ধের ফলাফল নির্ধারণ করে ইলুমিনাতি। ৪) আমেরিকান প্রেসিডেন্ট কেনেডির গুপ্তহত্যা আসলে ইলুমিনাতিই করিয়েছে, কারণ তিনি বাধা দিচ্ছিলেন তাদের কাজে। ৫) ‘নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার’ ত্বরান্বিত করা। এই অর্ডারের মাধ্যমে সারা বিশ্ব থাকবে ইলুমিনাতির হাতের মুঠোয়। ১৯৯১ সালে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের কথা প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সিনিয়র তার ভাষণে উল্লেখ করবার পর এই তত্ত¡ তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। ৬) হলিউডের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ইলুমিনাতির দখলে। এর মাধ্যমে ইলুমিনাতি আপনার অবচেতন মনে তাদের বিশ্বাসগুলো ঢুকিয়ে দিচ্ছে, কিংবা আপনাকে ব্রেইনওয়াশ করছে। ৭) শয়তানের উপাসনার মাধ্যমে স্বার্থ হাসিল করে ইলুমিনাতি। খ্রিস্টান ও মুসলিম ষড়যন্ত্র তত্ত¡মতে, ইলুমিনাতির এক চোখা প্রতীক প্রমাণ করে যে, ইলুমিনাতি হলো সেই সংঘ যারা একচোখা দাজ্জাল (কিংবা বাইবেল মতে ৬৬৬ বা অ্যান্টিক্রাইস্ট) এর আগমনের পথ সুগম করছে। ৮) বলা হয়, এই ব্যক্তিরাও ইলুমিনাতির সদস্যঃ বারাক ওবামা, পোপ, রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, জর্জ ডবিøউ বুশ, কানিয়ে ওয়েস্ট, বব ডিলান, রিহান্না, বিয়ন্সে, লেডি গাগা, জিম ক্যারি, ম্যাডোনা প্রমুখ। ৯) বব মার্লে, কেনেডি, মাইকেল জ্যাকসন, হিথ লেজার- এদেরকে স্যাক্রিফাইস হিসেবে উৎসর্গ করে ইলুমিনাতি। ১০) সারা পৃথিবী নিয়ন্ত্রণকারী Bilderberg Group এর সাথে ইলুমিনাতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ১১) ডিজনি কার্টুনের মাধ্যমে ইলুমিনাতি শিশুমনে ইলুমিনাতির বিশ্বাস ঢুকিয়ে দিতে চায়। ১২) ইলুমিনাতির বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১৯৪৭ সালে একটি ইউএফও ক্র্যাশ করানো হয় আমেরিকার রজওয়েলে, সেখান থেকে চারজন এলিয়েনকে উদ্ধার করা হয়।
আমেরিকান মিলিটারির সহায়তায় তারা ব্লাকমেইল করে তাদেরকে বাধ্য করে এলিয়েন প্রযুক্তি বিনিময় করতে। তাছাড়াও কিছু আকার পরিবর্তনে সক্ষম রেপ্টিলিয়ান এলিয়েন দ্বারা তারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বদল করেছে, যেন তাদের মতই দেখতে এলিয়েনরা কাজ চালিয়ে যায়, যেমন রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ একজন রেপ্টিলিয়ান এলিয়েন। তাছাড়া উন্নত ক্লোনিং প্রযুক্তির মাধ্যমে আসল ব্যক্তিদের হুবহু ক্লোন বসিয়ে দিয়ে পুরো বিশ্বের দখল নিয়ে নিচ্ছে ইলুমিনাতি।
ড্যান ব্রাউনের বিখ্যাত উপন্যাস ‘অ্যাঞ্জেলস অ্যান্ড ডিমন্স’ মূলত ইলুমিনাতি নিয়ে নতুন করে গণমনে আগ্রহ জাগিয়ে তোলে, যদিও সে বই শেষ পর্যন্ত পাঠককে ইলুমিনাতি বিষয়ে হতাশ করে। বইয়ের উপর করা চলচ্চিত্রে রবার্ট ল্যাংডন চরিত্রে অভিনয় করেন জনপ্রিয় অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস। শত শত বছর ধরে অসংখ্য জল্পনা কল্পনার ইলুমিনাতি কি আসলেই কাজ চালাচ্ছে আড়ালে আবডালে, নাকি এটা কেবল উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা? বর্তমান কালে অবশ্য নানা সংঘই ইলুমিনাতি নাম দিয়ে নিজেদের দাবি করে যে তারাই সত্যিকারের ব্যাভারিয়ান ইলুমিনাতি। তবে তারা কেন যেন আবার গোপনীয়তার ধার ধারে না, যেটা আসলে প্রমাণ করে তারা আসল ইলুমিনাতি নয়।
তথ্যসূত্র: অনলাইন।