উন্নয়নশীল দেশগুলোকে পাশ্চাত্য বিশ্ব প্রভাবিত বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯৪৪ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং পুনর্গঠন ও উন্নয়ন ব্যাংক (বর্তমান বিশ্বব্যাংক) প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে সম্পৃক্তির কলাকৌশলসমূহের সবটাই শুরুর দিকে নির্দিষ্ট করা ছিল না। যুদ্ধোত্তর নতুন আর্থিক ব্যবস্থাপনায় ডলারের সঙ্গে অন্যান্য মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা এবং লেনদেনের ক্ষেত্রে সাময়িক ভারসাম্যহীনতাকে সামাল দেয়ার জন্যই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের জন্ম। বিশ্বব্যাংকের কাজ ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঋণ প্রদান। কিন্তু বাস্তবে দুটি প্রতিষ্ঠানই ঋণের জাল বিস্তারের মাধ্যমে জনগণের সম্পদ পাশ্চাত্যের ব্যাংকসমূহ এবং অন্যান্য করপোরেট লুণ্ঠনকারীদের হাতে তুলে দিয়ে নিজেদের ভয়ানক শোষক রূপে প্রতিপন্ন করেছে।
বর্তমান সময়ে তারা ঋণগ্রহিতা দেশগুলোকে পুরনো ঋণ পরিশোধ করার জন্য নতুন নতুন ঋণ গ্রহণে বাধ্য হওয়ার এক ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়ার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। ফলে দেশগুলো এখন নতুন ঋণে জর্জরিত হচ্ছে এবং কাঠামোগত সমন্বয়ের এক দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। যেমন এ দেশগুলোতে এখন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেক প্রতিষ্ঠানই নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেয়া হয়। তাছাড়া বহু প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ঘোষণা এবং এ সংক্রান্ত আইনকানুন শিথিল করা হচ্ছে। সামাজিক খাতের বরাদ্দসমূহ ব্যাপকভাবে কাটছাট করা হচ্ছে এবং বেতন–ভাতাদিও বন্ধ কিংবা কমিয়ে ফেলা হচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত মুক্তবাজারের সুযোগ নিয়ে পশ্চিমা করপোরেশনগুলো এসব দেশে অবাধ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। করপোরেটবান্ধব করপ্রথা চালুর বিপরীতে সাধারণ মানুষের ওপর বিপুল পরিমাণ করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। শ্রমিক সংগঠনগুলোর ওপর নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিসমূহের ওপর চলছে দমনপীড়ন। ফলে দেশগুলোতে সামাজিক গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার বিঘিœত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এ সুযোগে ব্যাংক এবং অন্যান্য লুণ্ঠনকারী করপোরেট প্রতিষ্ঠান দেশগুলোর সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে। তারা জনগণের সম্পদ বেসরকারি খাতের আওতায় ব্যক্তিবিশেষের হাতে তুলে দিচ্ছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসমূহ ধ্বংস করে দিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া দেশগুলোকে স্রোতের বিপরীতে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। আর যদিও বা কোনো রকম কর্মসংস্থানের সৃষ্টি তারা করেও, তবে সে সব ক্ষেত্রে নিয়োজিত শ্রমিকদের দাসে পরিণত করা হচ্ছে।
ধারাবাহিকভাবে ঋণের জালে জড়িয়ে থাকা এক অর্থে স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলারই নামান্তর। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত এর প্রভাব পড়ে। বিপুল অধিকাংশ মানুষের কষ্টের বিনিময়ে মুষ্টিমেয় এলিটরা সব ধরনের সুযোগ–সুবিধা ভোগ করে। ঋণের জালে আটকেপড়া দেশগুলো শেষ পর্যন্ত তাদের ঋণদানকারী মালিকদের কুর্নিশ করতে শুরু করে এবং নিজেদের সার্বভৌমত্বও বিকিয়ে দেয়।
এর ফলে জন্ম নেয়া নয়া উদারীকীরণ আসলে নয়া ম্যালথাসবাদেরই নামান্তর। মানবতাকে বলি দিয়ে সে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তৎপর। এর পবিত্রতার দিকগুলো হলো এটি জনগণের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ রাখে না, করপোরেটদের সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী করে তোলে, সামাজিক খাতের সব ধরনের ব্যয় বরাদ্দ বাতিল করে দিয়ে রাষ্ট্রীয় সব সম্পদকে মুনাফাখোরদের হাতে তুলে দেয়। তাছাড়া জাতীয় এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এ ব্যবস্থা দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
মুষ্টিমেয় কিছু সুবিধাভোগী ছাড়া আর সবার জন্যই এ আর্থিক ব্যবস্থাটি অতিশয় নিকৃষ্ট ধরনের। এটি বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে ঋণের জালে আটকে ফাঁপা খোলসে পরিণত করে এবং উল্টো পথে টেনে নিয়ে যায়। যেমন গত শতকের আশির দশকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল মোট ১৮৭টি ঋণ প্রদান করেছিল। এ ঋণগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিল উন্নয়নশীল দেশ। ঋণগ্রহণের ফলে দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে দারিদ্র্য ক্ষুধা, অপুষ্টি রোগবালাই এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে সাবসাহারা অঞ্চলের সব দেশই অন্তর্ভুক্ত। কাঠামোগত সমন্বয়ের নামে এই দেশগুলোকে ঋণ নিতে বাধ্য করা হয়েছিল। ওই সময় দেশগুলোর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ২.২ শতাংশ হারে কমতে শুরু করেছিল। আর মাথাপিছু গড় আয়ও দেশগুলোর স্বাধীনতা পূর্ববর্তী গড় আয়ের অনেক নিচে নেমে যায়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত ছিল স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের বরাদ্দ যথাক্রমে ৫ শতাংশ ও ২৫ শতাংশ হারে কমিয়ে ফেলা। উপরন্তু ঋণের বোঝা বাড়তে থাকার পাশাপাশি দেশগুলোর ওপর ব্যয় সংকোচন কর্মসূচি চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। এর ফলে দেশগুলো তাদের পুরনো ঋণ শোধ করার জন্য নতুন করে আবারও ঋণ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিল। এটি ছিল এক ধরনের মৃত্যুচক্র। বহু দেশই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের এ চক্রের হাত থেকে আর রেহাই পায়নি। লাতিন আমেরিকার জন্য আশির দশক ছিল ভয়াবহ এক দশক। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে চিলিকে তার দেশের মজুরির পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমানোর শর্তে ঋণ নিতে হয়েছিল। ১৯৮২ সালের ঋণ সঙ্কট চলাকালে মেক্সিকোকে দেশের মজুরি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং মৌলিক অবকাঠামো খাতের বরাদ্দ অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হয়েছিল। ফলে দেশটিতে শিশু মৃত্যুর হার তিনগুণ বেড়ে গিয়েছিল এবং ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে অনেক রকমের জরুরি মানবিক চাহিদাই অপূর্ণ রাখতে হয়েছিল।
গত শতকের আশির দশকের শেষদিকে এসে উন্নয়নশীল এ দেশগুলোকে খুবই খারাপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। আর এসব পরিস্থিতি ছিল ঋণ প্রদানকারী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কর্মকর্তাদের পরিকল্পনারই ফসল। মুদ্রার অবমূল্যায়ন চলতে থাকল। ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেল। প্রবৃদ্ধির পতন ঘটলো। ১৯৭৬ সালের প্রথম দিক থেকে শুরু করে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত সময়ে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। পুরনো ঋণ পরিশোধ করার জন্য তাদের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত নতুন ঋণ নিতে হয়েছিল।
অথচ এরপরও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের চুক্তির ধারাসমূহের ১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যথেষ্ট নিরাপত্তা বিধান করেই সদস্য দেশগুলোর কাছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তার ঋণ কর্মসূচি সহজলভ্য করে দিচ্ছে – যাতে করে তাদের মধ্যে একটা আস্থার অবস্থা সৃষ্টি হয়। এর ফলে তারা তাদের ব্যালান্স অফ পেমেন্টে প্রয়োজনীয় ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবে এবং এক্ষেত্রে তাদের জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক অগ্রগতিতে বাধাদানকারী কোনো সূত্রের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তার ওয়েবসাইটে বলেছে, সে দারিদ্র কমিয়ে আনা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ঋণ প্রদান করে থাকে। একই সঙ্গে সংস্থাটি দাবি করেছে, কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সবচেয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীকে তাদের সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু বাস্তবে সংস্থাটি এর ঠিক বিপরীত কাজগুলোই করে থাকে। সে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ঋণ, দরিদ্র আর বঞ্চনার জালে আটকে ফেলে এবং নিজে ঋণদাতা এক বৈশ্বিক হাঙ্গরের ভূমিকায় অবর্তীণ হয়। কেবল এক পাউন্ড মাংসেই সে আর তখন সন্তুষ্ট থাকে না, পুরো দেহটাই সে উদরস্থ করতে চায়। এতে কে কতোটা দুঃখ পেল বা বেদনায় আক্রান্ত হলো সেদিকে তার কোনো ভ্রƒক্ষেপই নেই।
পিনোশের আমলে চিলিও একবার এ রকম ঋণের জালে আটকা পড়েছিল। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৫ সালে দেশটির বেকারত্ব তখন ৯ দশমিক ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে গিয়ে পৌছেছিল। সস্তা পণ্য দ্রব্যের আমদানি ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার ফলে দেশটির উৎপাদনশীলতা ১২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গিয়েছিল। এর ফলে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়, ক্ষুধা বাড়তে থাকে এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করতে গিয়ে গণঅসন্তোষ দেখা দিতে শুরু করে। পরিস্থিি সামাল দিতে সরকার নির্যাতন ও নিপীড়নের পথ বেছে নেয়। এক দশক পর প্রবৃদ্ধির হাত বাড়তে শুরু করলেও ততদিনে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে গেছে অনেক। ৪৫ শতাংশ চিলিবাসী দারিদ্র্যসীমায় নেমে গিয়েছিল এবং ১০ শতাংশ ধনীদের আয় ৮৩ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও একই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসবের মধ্যে ছিল ব্যাপক গণদারিদ্র্য, জনগণের সম্পদ বেসরকারি খাতে চলে যাওয়া, নিয়ন্ত্রণহীন দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি। ফলে অগাধ সম্পদের মালিক মুষ্টিমেয় এলিটদের হাতে আরো বেশি সম্পদ তুলে দিতে গিয়ে একটি অন্তঃসারশূন্য খোলসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।
ভিক্টর পাজ এস্টেনসরোর আমলে আশির দশকে বলিভিয়ার ব্যয় সংকোচন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দেশটিতে মজুরির পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেয়া হয়েছিল। খাদ্যে ভর্তুকি বন্ধ করার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়া হয় এবং এ সময় জ্বালানি তেলের মূল্য ৩০০ ভাগ বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক খাতগুলো থেকে বিপুল আকারে বরাদ্দ তুলে নেয়া হয় এবং নিয়ন্ত্রণহীন আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। আর বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার আগে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের আকার ছেটে ফেলা হলে ব্যাপক বেকারত্ব দেখা দেয়। আশির দশকে লাতিন আমেরিকাতে ঋণের পরিমাণ ছিল ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৯৯২ সাল নাগাদ সেই ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭৩ বিলিয়ন ডলারে। একইভাবে আশির দশকে ঋণের বিপরীতে সুদের পরিমাণ ছিল যেখানে ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ১৯৯২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে। এর ফলে দেশটির শ্রমিকদের জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্য ও তাদের জন্য নেয়া কল্যাণ কর্মসূচিসমূহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে বলতে হয়, এ সময়ে লাখ লাখ শ্রমিক কোনো মতে খেয়ে পরে বেচে থাকার মতো মজুরি উপার্জন করতে পেরেছে, তারা এক অর্থে ভাগ্যবান। আর তাদের বঞ্চিত করেই বিদেশি লুন্ঠনকারীরা বিপুল পরিমাণ মুনাফা লুটেছে। শ্রমিকদের দূরাবস্থার বিনিময়েই ওই সব লুণ্ঠনকারীরা নিজেদের সৌভাগ্যের প্রাসাদ নির্মাণ করেছে। একই দৃশ্য অভিনীত হতে দেখা গেছে আফ্রিকার সাবসাহারা অঞ্চল থেকে শুরু করে লাতিন আমেরিকা হয়ে রাশিয়া পর্যন্ত।
১৯৯৭–৯৮ সময়কালে এশিয়ার ব্যাঘ্র হিসেবে খ্যাত দেশগুলোতেও সেই একই দৃশ্য চোখে পড়েছে। এসব দেশের কোনোটাতে এককভাবে, আবার কোনোটাতে যৌথভাবে লুণ্ঠন চালিয়ে বিস্ময় জাগানিয়া এশিয়াকে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ পানির দরে বিক্রি করে দেয়ার ফলে অন্তত ২৪ মিলিয়ন মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। এ সময় স্থানীয় সব কিছু পাল্টে সে সব স্থানে পাশ্চাত্যের বিষয়াদিকে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আর এ থেকে বিদেশি লুণ্ঠনকারীরা প্রভূত পরিমাণ লাভ তুলে নেয়। অবস্থাটিকে নিউইয়র্ক টাইমস ‘বিশ্বের সর্ববৃহৎ ব্যবসা’ হিসেবে অভিহিত করেছিল।
একই সময়ে এশিয়ার শ্রমিকরা মানবিক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল এবং সেটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অনুসৃত নীতির কারণেণই। তবে নিজের সম্পর্কে প্রতিনিয়ত মিথ তৈরি করা এবং কেবল মুনাফা অর্জনের জন্যই ঋণ বিতরণকারী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এশিয়ার শ্রমিকদের এ দূরবস্থার কারণটি কখনো ব্যাখ্যা করতে প্রয়োজন অনুভব করেনি।।
(ইন্টারনেট থেকে ভাষান্তর), কৃতজ্ঞতা: আমাদের বুধবার
বর্তমান সময়ে তারা ঋণগ্রহিতা দেশগুলোকে পুরনো ঋণ পরিশোধ করার জন্য নতুন নতুন ঋণ গ্রহণে বাধ্য হওয়ার এক ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়ার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। ফলে দেশগুলো এখন নতুন ঋণে জর্জরিত হচ্ছে এবং কাঠামোগত সমন্বয়ের এক দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। যেমন এ দেশগুলোতে এখন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানসমূহ বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেক প্রতিষ্ঠানই নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে দেয়া হয়। তাছাড়া বহু প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ঘোষণা এবং এ সংক্রান্ত আইনকানুন শিথিল করা হচ্ছে। সামাজিক খাতের বরাদ্দসমূহ ব্যাপকভাবে কাটছাট করা হচ্ছে এবং বেতন–ভাতাদিও বন্ধ কিংবা কমিয়ে ফেলা হচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত মুক্তবাজারের সুযোগ নিয়ে পশ্চিমা করপোরেশনগুলো এসব দেশে অবাধ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। করপোরেটবান্ধব করপ্রথা চালুর বিপরীতে সাধারণ মানুষের ওপর বিপুল পরিমাণ করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। শ্রমিক সংগঠনগুলোর ওপর নির্যাতন চালানোর পাশাপাশি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিসমূহের ওপর চলছে দমনপীড়ন। ফলে দেশগুলোতে সামাজিক গণতন্ত্র, নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার বিঘিœত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এ সুযোগে ব্যাংক এবং অন্যান্য লুণ্ঠনকারী করপোরেট প্রতিষ্ঠান দেশগুলোর সম্পদ লুটেপুটে খাচ্ছে। তারা জনগণের সম্পদ বেসরকারি খাতের আওতায় ব্যক্তিবিশেষের হাতে তুলে দিচ্ছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসমূহ ধ্বংস করে দিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া দেশগুলোকে স্রোতের বিপরীতে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। আর যদিও বা কোনো রকম কর্মসংস্থানের সৃষ্টি তারা করেও, তবে সে সব ক্ষেত্রে নিয়োজিত শ্রমিকদের দাসে পরিণত করা হচ্ছে।
ধারাবাহিকভাবে ঋণের জালে জড়িয়ে থাকা এক অর্থে স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলারই নামান্তর। উপর থেকে নিচ পর্যন্ত এর প্রভাব পড়ে। বিপুল অধিকাংশ মানুষের কষ্টের বিনিময়ে মুষ্টিমেয় এলিটরা সব ধরনের সুযোগ–সুবিধা ভোগ করে। ঋণের জালে আটকেপড়া দেশগুলো শেষ পর্যন্ত তাদের ঋণদানকারী মালিকদের কুর্নিশ করতে শুরু করে এবং নিজেদের সার্বভৌমত্বও বিকিয়ে দেয়।
এর ফলে জন্ম নেয়া নয়া উদারীকীরণ আসলে নয়া ম্যালথাসবাদেরই নামান্তর। মানবতাকে বলি দিয়ে সে তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে তৎপর। এর পবিত্রতার দিকগুলো হলো এটি জনগণের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ রাখে না, করপোরেটদের সীমাহীন ক্ষমতার অধিকারী করে তোলে, সামাজিক খাতের সব ধরনের ব্যয় বরাদ্দ বাতিল করে দিয়ে রাষ্ট্রীয় সব সম্পদকে মুনাফাখোরদের হাতে তুলে দেয়। তাছাড়া জাতীয় এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এ ব্যবস্থা দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।
মুষ্টিমেয় কিছু সুবিধাভোগী ছাড়া আর সবার জন্যই এ আর্থিক ব্যবস্থাটি অতিশয় নিকৃষ্ট ধরনের। এটি বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিকে ঋণের জালে আটকে ফাঁপা খোলসে পরিণত করে এবং উল্টো পথে টেনে নিয়ে যায়। যেমন গত শতকের আশির দশকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল মোট ১৮৭টি ঋণ প্রদান করেছিল। এ ঋণগ্রহণকারীদের অধিকাংশই ছিল উন্নয়নশীল দেশ। ঋণগ্রহণের ফলে দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে দারিদ্র্য ক্ষুধা, অপুষ্টি রোগবালাই এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এদের মধ্যে সাবসাহারা অঞ্চলের সব দেশই অন্তর্ভুক্ত। কাঠামোগত সমন্বয়ের নামে এই দেশগুলোকে ঋণ নিতে বাধ্য করা হয়েছিল। ওই সময় দেশগুলোর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ২.২ শতাংশ হারে কমতে শুরু করেছিল। আর মাথাপিছু গড় আয়ও দেশগুলোর স্বাধীনতা পূর্ববর্তী গড় আয়ের অনেক নিচে নেমে যায়। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার শর্ত ছিল স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতের বরাদ্দ যথাক্রমে ৫ শতাংশ ও ২৫ শতাংশ হারে কমিয়ে ফেলা। উপরন্তু ঋণের বোঝা বাড়তে থাকার পাশাপাশি দেশগুলোর ওপর ব্যয় সংকোচন কর্মসূচি চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। এর ফলে দেশগুলো তাদের পুরনো ঋণ শোধ করার জন্য নতুন করে আবারও ঋণ গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিল। এটি ছিল এক ধরনের মৃত্যুচক্র। বহু দেশই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের এ চক্রের হাত থেকে আর রেহাই পায়নি। লাতিন আমেরিকার জন্য আশির দশক ছিল ভয়াবহ এক দশক। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে চিলিকে তার দেশের মজুরির পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমানোর শর্তে ঋণ নিতে হয়েছিল। ১৯৮২ সালের ঋণ সঙ্কট চলাকালে মেক্সিকোকে দেশের মজুরি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং মৌলিক অবকাঠামো খাতের বরাদ্দ অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হয়েছিল। ফলে দেশটিতে শিশু মৃত্যুর হার তিনগুণ বেড়ে গিয়েছিল এবং ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে অনেক রকমের জরুরি মানবিক চাহিদাই অপূর্ণ রাখতে হয়েছিল।
গত শতকের আশির দশকের শেষদিকে এসে উন্নয়নশীল এ দেশগুলোকে খুবই খারাপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়েছে। আর এসব পরিস্থিতি ছিল ঋণ প্রদানকারী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কর্মকর্তাদের পরিকল্পনারই ফসল। মুদ্রার অবমূল্যায়ন চলতে থাকল। ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেল। প্রবৃদ্ধির পতন ঘটলো। ১৯৭৬ সালের প্রথম দিক থেকে শুরু করে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত সময়ে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। পুরনো ঋণ পরিশোধ করার জন্য তাদের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত নতুন ঋণ নিতে হয়েছিল।
অথচ এরপরও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের চুক্তির ধারাসমূহের ১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যথেষ্ট নিরাপত্তা বিধান করেই সদস্য দেশগুলোর কাছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তার ঋণ কর্মসূচি সহজলভ্য করে দিচ্ছে – যাতে করে তাদের মধ্যে একটা আস্থার অবস্থা সৃষ্টি হয়। এর ফলে তারা তাদের ব্যালান্স অফ পেমেন্টে প্রয়োজনীয় ভারসাম্য রক্ষা করতে পারবে এবং এক্ষেত্রে তাদের জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক অগ্রগতিতে বাধাদানকারী কোনো সূত্রের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল তার ওয়েবসাইটে বলেছে, সে দারিদ্র কমিয়ে আনা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ঋণ প্রদান করে থাকে। একই সঙ্গে সংস্থাটি দাবি করেছে, কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সবচেয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীকে তাদের সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু বাস্তবে সংস্থাটি এর ঠিক বিপরীত কাজগুলোই করে থাকে। সে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ঋণ, দরিদ্র আর বঞ্চনার জালে আটকে ফেলে এবং নিজে ঋণদাতা এক বৈশ্বিক হাঙ্গরের ভূমিকায় অবর্তীণ হয়। কেবল এক পাউন্ড মাংসেই সে আর তখন সন্তুষ্ট থাকে না, পুরো দেহটাই সে উদরস্থ করতে চায়। এতে কে কতোটা দুঃখ পেল বা বেদনায় আক্রান্ত হলো সেদিকে তার কোনো ভ্রƒক্ষেপই নেই।
পিনোশের আমলে চিলিও একবার এ রকম ঋণের জালে আটকা পড়েছিল। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৫ সালে দেশটির বেকারত্ব তখন ৯ দশমিক ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে গিয়ে পৌছেছিল। সস্তা পণ্য দ্রব্যের আমদানি ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার ফলে দেশটির উৎপাদনশীলতা ১২ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গিয়েছিল। এর ফলে দেশের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়, ক্ষুধা বাড়তে থাকে এবং অর্থনৈতিক সঙ্কট মোকাবেলা করতে গিয়ে গণঅসন্তোষ দেখা দিতে শুরু করে। পরিস্থিি সামাল দিতে সরকার নির্যাতন ও নিপীড়নের পথ বেছে নেয়। এক দশক পর প্রবৃদ্ধির হাত বাড়তে শুরু করলেও ততদিনে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে গেছে অনেক। ৪৫ শতাংশ চিলিবাসী দারিদ্র্যসীমায় নেমে গিয়েছিল এবং ১০ শতাংশ ধনীদের আয় ৮৩ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও একই ধরনের ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। এসবের মধ্যে ছিল ব্যাপক গণদারিদ্র্য, জনগণের সম্পদ বেসরকারি খাতে চলে যাওয়া, নিয়ন্ত্রণহীন দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতি। ফলে অগাধ সম্পদের মালিক মুষ্টিমেয় এলিটদের হাতে আরো বেশি সম্পদ তুলে দিতে গিয়ে একটি অন্তঃসারশূন্য খোলসে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।
ভিক্টর পাজ এস্টেনসরোর আমলে আশির দশকে বলিভিয়ার ব্যয় সংকোচন কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দেশটিতে মজুরির পরিমাণ ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেয়া হয়েছিল। খাদ্যে ভর্তুকি বন্ধ করার পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়া হয় এবং এ সময় জ্বালানি তেলের মূল্য ৩০০ ভাগ বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক খাতগুলো থেকে বিপুল আকারে বরাদ্দ তুলে নেয়া হয় এবং নিয়ন্ত্রণহীন আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। আর বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার আগে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের আকার ছেটে ফেলা হলে ব্যাপক বেকারত্ব দেখা দেয়। আশির দশকে লাতিন আমেরিকাতে ঋণের পরিমাণ ছিল ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৯৯২ সাল নাগাদ সেই ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৭৩ বিলিয়ন ডলারে। একইভাবে আশির দশকে ঋণের বিপরীতে সুদের পরিমাণ ছিল যেখানে ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার ১৯৯২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে। এর ফলে দেশটির শ্রমিকদের জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্য ও তাদের জন্য নেয়া কল্যাণ কর্মসূচিসমূহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে বলতে হয়, এ সময়ে লাখ লাখ শ্রমিক কোনো মতে খেয়ে পরে বেচে থাকার মতো মজুরি উপার্জন করতে পেরেছে, তারা এক অর্থে ভাগ্যবান। আর তাদের বঞ্চিত করেই বিদেশি লুন্ঠনকারীরা বিপুল পরিমাণ মুনাফা লুটেছে। শ্রমিকদের দূরাবস্থার বিনিময়েই ওই সব লুণ্ঠনকারীরা নিজেদের সৌভাগ্যের প্রাসাদ নির্মাণ করেছে। একই দৃশ্য অভিনীত হতে দেখা গেছে আফ্রিকার সাবসাহারা অঞ্চল থেকে শুরু করে লাতিন আমেরিকা হয়ে রাশিয়া পর্যন্ত।
১৯৯৭–৯৮ সময়কালে এশিয়ার ব্যাঘ্র হিসেবে খ্যাত দেশগুলোতেও সেই একই দৃশ্য চোখে পড়েছে। এসব দেশের কোনোটাতে এককভাবে, আবার কোনোটাতে যৌথভাবে লুণ্ঠন চালিয়ে বিস্ময় জাগানিয়া এশিয়াকে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ পানির দরে বিক্রি করে দেয়ার ফলে অন্তত ২৪ মিলিয়ন মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। এ সময় স্থানীয় সব কিছু পাল্টে সে সব স্থানে পাশ্চাত্যের বিষয়াদিকে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আর এ থেকে বিদেশি লুণ্ঠনকারীরা প্রভূত পরিমাণ লাভ তুলে নেয়। অবস্থাটিকে নিউইয়র্ক টাইমস ‘বিশ্বের সর্ববৃহৎ ব্যবসা’ হিসেবে অভিহিত করেছিল।
একই সময়ে এশিয়ার শ্রমিকরা মানবিক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল এবং সেটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অনুসৃত নীতির কারণেণই। তবে নিজের সম্পর্কে প্রতিনিয়ত মিথ তৈরি করা এবং কেবল মুনাফা অর্জনের জন্যই ঋণ বিতরণকারী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এশিয়ার শ্রমিকদের এ দূরবস্থার কারণটি কখনো ব্যাখ্যা করতে প্রয়োজন অনুভব করেনি।।
(ইন্টারনেট থেকে ভাষান্তর), কৃতজ্ঞতা: আমাদের বুধবার