ইমা: মাত্র ৬ ঘণ্টা ফেসবুক বন্ধ ছিলো। আর তাতেই পৃথিবীর প্রায় ৩০০ কোটি ব্যবহারকারির কাছে বিশ্ব অন্ধ হয়ে পড়েছিলো। সকল যোগাযোগ, বাণিজ্য, কথা বলা বন্ধ হয়ে এক মহাবিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছিলো। প্রযুক্তির এই বিশ্বে আমরা মাত্র একটি মাধ্যমের উপর কতটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি এই ঘটনা সবাইকে যেনো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো। বাংলাদেশ সময় গত ৪ অক্টোবর রাত ৯টা ৪৪ মিনিট থেকে বিশ্বে ফেসবুকের সার্ভার ডাউন ছিল অন্তত ৬ ঘণ্টার জন্য। ২০০৮ সালের পর এটাই ফেসবুকের সবচেয়ে বড় সার্ভার ধ্বস। ৩০০ কোটি ব্যবহারকারি ব্যবহার করতে পারছিলো না ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার ও ইন্সটাগ্রাম। কেন কীভাবে এ ঘটনা ঘটলো? এর অর্থনৈতিক প্রভাবটাই বা কেমন? তথ্য অনুযায়ী ফেসবুকের সার্ভার বিপর্যয়ের কারণে এর প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গের অর্থেও ধ্বস নেমেছে বাংলাদেশের মুদ্রায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকাÑযা ডলারের পরিমাণে দাঁড়ায় ৬০০ কোটি।
৪ অক্টোবর ফেসবুকের মার্কেট শেয়ার প্রাইস দ্রæত রেকর্ড পরিমাণ ৪.৯% ড্রপ করেছে। তবে সেটা এমনিতেও পড়ছিলো। মার্ক জাকারবার্গের মোট সম্পদের পরিমাণ কমে গিয়েছে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার, ফলে শীর্ষ ধনীর তালিকায় এক ঘর পিছিয়ে পঞ্চম স্থানে চলে গেছেন। বিল গেটসের এক ঘর পেছনে।
জিমেইল, টিকটক ও স্ন্যাপচ্যাট ইউজাররা অভিযোগ করেছিলেন অ্যাপ সেøা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে, যেহেতু ফেসবুকের অ্যাপগুলোতে ঢুকতে না পারা লোকেরা গণহারে এগুলোতে হঠাৎ লগ-ইন করেছে।
কোনো হ্যাক নয়, বরং নেটওয়ার্ক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের পরিবর্তনের কারণে সার্ভার ডাউন হওয়াই এর পেছনে কারণ বলে জানা যায়। ফেসবুকের কর্মকর্তারা যখন সকালবেলা এই আউটেজের কারণ অনুসন্ধানের জন্য তাদের অফিসে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন, তখন তাদের কার্ডে এন্ট্রি নিচ্ছিল না অনেকের। তাই তারা ঢুকতেও পারছিলেন না। ফেসবুকের নিজস্ব যে প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইন্টার্নাল কমিউনিকেশন করা হয়, সেটিও কাজ করছিলো না।
ফেসবুক সংক্রান্ত অ্যাপগুলো ডাউন থাকায় বিশ্বজুড়ে নানা ব্যবসায় মোটমাট সব মিলিয়ে ঘণ্টায় ১৬ কোটি ডলার করে লোকসান হয়েছে। ছয় ঘণ্টায় মোট লোকসান ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই উধাও ২৩২ মিলিয়ন ডলার!
এমনিতেই হুইসেল-ব্লেয়ার নিয়ে কাহিনী চলছে ফেসবুকের। এই হুইসেল-ব্লেয়ার হলেন ফেসবুকের প্রাক্তন প্রোডাক্ট ম্যানেজার ফ্রান্সেস হাওগেন। তার অভিযোগ হলো, নিরাপত্তার তুলনায় প্রফিটকেই বেশি গুরুত্ব দেয় ফেসবুক; মার্কিন নির্বাচনের পর ভুয়া তথ্যে সয়লাব হয়ে গেলেও সেগুলো বিতাড়নে বেশি একটা ভূমিকা রাখেনি ফেসবুক; তারপর, ইনস্টাগ্রামে দৃষ্টিনন্দন লাইফস্টাইল যাপন করতে দেখে অনেকের মানসিক সমস্যা হয়, ইত্যাদি হলো তার কিছু অভিযোগ। ফেসবুক অবশ্য তার এসব অভিযোগকে ‘মিসলিডিং’ বলেছে। যাই হোক, গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে হিসেব করলে ১৫% শেয়ার প্রাইস ড্রপ করেছে ফেসবুকের।
ন্যাজড্যাক (Nasdaq) ও অন্যান্য মার্কিন স্টক মার্কেটের ওপর চোখ রাখলে দেখবেন, গত কয়েকদিন ধরেই টেক কোম্পানিগুলোর স্টক প্রাইস কমছে ওয়াল স্ট্রিটে। ইদানিং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ইল্ড বাড়ছে (যার মানে, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঋণ নেয়ার ওপর আরোপিত ইন্টারেস্ট রেট বাড়ছে), যেকারণে বিনিয়োগকারীরা টেক সংক্রান্ত স্টক থেকে সরে আসছেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কও একটা বড় কারণ। Nvidia-রও স্টক প্রাইস ফল করেছে ৪.৮৭%। অ্যাপল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট, গুগল (অ্যালফাবেট) আর অ্যামাজনের আজ শেয়ার প্রাইস ড্রপ করেছে ২.৪% থেকে ৫.৮% এর মাঝে!
তো, এবার আসল ঘটনায় আসি। হয়েছিলটা কী ফেসবুকের? মোটা দাগে একদমই লেমেন্স টার্মে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি। আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে, ফেসবুক যেন তাদের ইন্টারনেট দুনিয়ার সাথে যুক্ত থাকার প্লাগটাই খুলে ফেলেছিল ভুলবশত। কিন্তু ইন্টারনেটের তো আর প্লাগ হয় না, আসল ব্যাখ্যাটা তাই আরেকটু জটিল। যারা টেকনিক্যাল কপচানি শুনতে আগ্রহী তারা পড়তে পারেন-
৪ অক্টোবর ঘটনা যখন ঘটলো, তখন দেখা গেল ফেসবুকের DNS Names সাড়া দিচ্ছে না। তাদের DNS Server উধাও। প্রশ্ন হলো, ডিএনএস কী? ‘ডোমেইন নেম সিস্টেম' বা ডিএনএস) হচ্ছে এমন একটা প্রযুক্তি যা ইন্টারনেট ব্যবহরকারিদেরকে বিভিন্ন সাইট এবং নেটের অন্যান্য স্থানে ডিরেক্ট করে। যেমন ধরুন, আপনার মোবাইলে যেসব নাম্বার সেভ করা আছে, আপনি তাদেরকে চেনেন কীভাবে? বিভিন্ন নাম দিয়ে সেভ করে। এই নাম্বারে কল করতে হলে, আমি অমুক নাম দিয়ে সার্চ করব। ডিএনএস ব্যাপারখানাও তাই, এটি আপনার ডিভাইসকে জানায় যে সাইটটি আপনি খুঁজছেন সেটি এখন কোথায় আছে। দেখা গেল, ফেসবুকের ঠিকানাই বেমালুম উধাও হয়ে গিয়েছে নেট দুনিয়া থেকে!
বাংলায় কথাগুলো বোঝানো অবশ্য বেশ কষ্ট, যেহেতু এগুলোর বাংলা টার্ম নেই আদৌ। একেক আইপি (ইন্টারনেট প্রোটোকল) থেকে আরেক আইপিতে ডেটা কীভাবে যাবে না যাবে সেই রাউটিং প্রেফিক্সগুলোর বড়সড় সংগ্রহকে বলা হয় Autonomous System (AS)। আপনি চিন্তা করতে পারেন সহজ করে এভাবে- অনেকগুলো রাউটারের সমগ্র। তো, প্রতিটি অঝ এর একটি করে নাম্বার আছে। এই বিভিন্ন অঝ এর মাঝে তথ্য আদানপ্রদান করা হয় যে মেকানিজমের মাধ্যমে তা হলো ‘বর্ডার গেটওয়ে প্রোটোকল’ (BGP)। এটি ঠিক করে দেয় কোন পথ দিয়ে কোন কোন সিস্টেমের মধ্য দিয়ে ডেটা ট্রান্সফার হবে, যদি এই পথ খোলা না থাকে, তবে অন্য পথ; ওটাও সমস্যা থাকলে আরেকটি পথ বের করে ফেলবে। এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যাবার যেমন অনেক রাস্তা থাকতে পারে, তেমন এক অঝ থেকে আরেক অঝ এ পৌঁছাতে অনেকগুলো রাস্তা দিয়েই পৌঁছানো যেতে পারে। বিজিপি না থাকলে কোনোভাবেই এই তথ্য ঠিকভাবে পৌঁছাবে না। এই ইএচ-র মাধ্যমেই একেকটি নেটওয়ার্ক (যেমন ধরুন ফেসবুক) অন্যদের কাছে জানান দেয় তার উপস্থিতি।
ফেসবুক এই ছয় ঘণ্টা তার উপস্থিতির জানান দিচ্ছিল না! ফেসবুকের ইন্টারনাল সার্ভারও ধসে পড়ে এ সময়টাতে। জানা যাচ্ছে, ফেসবুকের প্রকৌশলীরা একটি কনফিগারেশন পরিবর্তন করতে গিয়েছিলেন, এবং পর মুহূর্তেই বিশ্বব্যাপী ডাউন হয়ে যায় ফেসবুক। এই পরিবর্তন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তারা দুর্ঘটনাবশতঃ নিজেদের সিস্টেম থেকে নিজেদেরকেই লাথি মেরে বের করে লগ আউট করে দেয়। একমাত্র সেই সময় যেসব টেকনিশিয়ান শারীরিকভাবে ফেসবুক অফিসে উপস্থিত ছিলেন, তাদের কাঁধেই এই মহাবিপদ সমাধানের দায়িত্ব এসে পড়ে, যখন প্রতি ঘণ্টায় দুনিয়াজুড়ে বিপুল অঙ্কের লোকসান চলছে। মোটামুটি ছয় ঘণ্টা বাদে তারা ফিরিয়ে আনতে পারে তাদের উপস্থিতি।
ফেসবুকের ভেতরে কী চলছে বাইরে কেউ জানে না: ফ্রান্সেস হাউগেন
ফেসবুকের নিজস্ব খরচে অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য করা কয়েক হাজার পৃষ্ঠার গবেষণাপত্র ও নথি ফাঁস করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন। মে মাসে ফেসবুক ছাড়ার পর সোমবার তিনি মার্কিন টিভি চ্যানেল সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে কথা বলেন। ফ্রান্সেস হাউগেনের ভাষ্য, যত দিন ফেসবুক আড়ালে কাজ করে যাচ্ছে, তত দিন তারা কারও কাছে জবাবদিহি করবে না। এ কারণেই তিনি সামনে এসেছেন।
সম্প্রতি ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা, পণ্য নিরাপত্তা ও তথ্যের সুরক্ষাবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট উপকমিটির কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ফ্রান্সেস হাউগেনের। এজন্য তার লিখিত বক্তব্য সংগ্রহ করেছে। লিখিত বক্তব্য হাউগেন বলেন, 'আমি যা করেছি, তা সঠিক এবং মানুষের ভালোর জন্য বলেই বিশ্বাস করি। বাইরে প্রায় কেউই জানে না ফেসবুকের ভেতরে কী চলছে। আমি এই ভীতিকর সত্য বলতে সামনে এসেছি। তবে এও জানি, ফেসবুকের সম্পদের শেষ নেই, যা ব্যবহার করে আমাকে শেষ করে দিতে পারে তারা। গুগল ও পিন্টারেস্টে কাজ করা ফ্রান্সেস হাউগেন ২০১৯ সালে ফেসবুকে যোগ দেন। ৩৭ বছর বয়সী হাউগেন ফেসবুকের মিথ্যা তথ্য প্রসার রোধে কাজ করা দলের পণ্য ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ফেসবুকের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে চলতি বছর প্রতিষ্ঠানটি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এর আগে ফেসবুকের বেশকিছু অভ্যন্তরীণ নথি সঙ্গে নিয়ে যান তিনি। এ নথিগুলো প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেন হাউগেন, যা নিয়ে তিন সপ্তাহ ধরে পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি।
‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে হাউগেন বলেন, ফেসবুক যে মানুষের ক্ষতি করছে, সহিংসতা ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, তা প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ নির্বাহীরা জানতেন বলেই নথিগুলো থেকে জানা যায়। তবে জেনেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা করেছেন তারা।
বিভ্রাট রাউটারে ক্রটির কারণে
ব্যাকবোন রাউটারের কনফিগারেশনে পরিবর্তন আনায় ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের সেবা বিঘ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেসবুকের একজন মুখপাত্র। তিনি বলেন,‘ফেসবুকের ডেটা সার্ভারগুলোর মধ্যে নেটওয়ার্ক ট্র্যাফিক সমন্বয় করে রাউটারটি। এতে সার্ভারের ডেটা আদান-প্রদান ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেবাগুলো বন্ধ হয়ে যায়।’ ফেসবুকের সেবাগুলো অনলাইনে ফিরে এসেছে এবং কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে পুরোদমে কাজ চলছে বলেও জানিয়েছে প্রকৌশল দল। সেই সঙ্গে বলেছে, ‘কনফিগারেশনে পরিবর্তন আনতে গিয়ে সেবা কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হওয়ার কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।’
মান সময় ১৬ ঘটিকায় সার্ভার ডাউন হয়ে যাওয়ার পর মান সময় ২২ ঘটিকায় তা সারিয়ে তুলতে সক্ষম হন ফেসবুক কর্মীরা। সোমবার রাত ৯টার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় এই তিন মাধ্যম ওয়েব বা স্মার্টফোন থেকে ব্যবহার করতে পারছিলেন না ব্যবহারকারীরা। সার্ভার ডাউন হওয়ার তথ্য প্রকাশ করা ওয়েবসাইট ডাউন ডিটেকটর বিবিসিকে জানিয়েছে, ২০১৯ সালের পর ফেসবুক পরিষেবায় এটাই সবচেয়ে বড় বিপর্যয়। সোমবার রাত থেকে ১ কোটি ৬ লাখ ব্যবহারকারী তাদের ওয়েবসাইটে এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছে। জনপ্রিয় এই যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বার্তা আদান–প্রদান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন বিশ্বজুড়ে লাখো ব্যবহাকারী। রাত সাড়ে চারটার দিকে এই টুইট বার্তায় সার্ভার সচল হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্ভার জটিলতায় এক টুইটবার্তায় ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে ফেসবুক। টেক জায়ান্টটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মাইক শ্রোফার বলেছেন, ফেসবুকের শতভাগ পরিষেবা পেতে আরো কিছু সময় লাগতে পারে।
ফেসবুকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, ‘ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার আবারও সচল হয়েছে। আমরা এই অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমরা জানি, প্রিয়জনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার জন্য আপনারা এই পরিষেবাগুলোর ওপর কতটা নির্ভরশীল।’
২০১৯ সালে সার্ভার জটিলতার কারণে ফেসবুক এবং এর অন্যান্য অ্যাপস বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৪ ঘন্টারও বেশি সময় ব্যবহার করা যায়নি।
৬ ঘণ্টায় ৬০০ কোটি ডলার নেই জাকারবার্গের
মাত্র ছয় ঘণ্টা বন্ধ ছিল ফেসবুক। হঠাৎ করে যোগাযোগ মাধ্যমটির ওয়েবসাইট বা অ্যাপে ঢোকা যাচ্ছিল না। এতেই প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ কমে গেছে এক ধাক্কায় ৬০০ কোটি ডলারের বেশি। পিছিয়ে গেছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকাতেও। ইয়াহু ফাইন্যান্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য সেপ্টেম্বর থেকেই ফেসবুকের শেয়ারের দর ১৫ শতাংশের মতো কম। সোমবারের ঘটনায় তা আরও ৪ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গেছে। আর এতে জাকারবার্গের নিট সম্পদ কমে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ১৬০ কোটি ডলারে।
হঠাৎ করে ৬০০ কোটি ডলার কমে যাওয়ায় বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকাতেও পিছিয়ে গেছেন জাকারবার্গ। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার সূচকে জাকারবার্গ এখন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের পেছনে। তালিকায় জাকারবার্গ আছেন পাঁচ নম্বরে, এক ধাপ এগিয়ে বিল গেটস রয়েছেন চার নম্বরে। সূচকটির তথ্য অনুযায়ী, মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে জাকারবার্গের সম্পদ ১৪ হাজার কোটি ডলার থেকে এতটা অর্থাৎ ১২ হাজার ১৬০ কোটি ডলারে নেমে এল। এরমধ্যে ছয় ঘণ্টায় নেই ৬০০ কোটি ডলারের বেশি। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন মার্ক জাকারবার্গ। তিনি বলেন, ‘ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জার এখন সচল হয়েছে। অনাকাক্সিক্ষত এ ঘটনার জন্য আমরা দুঃখিত।’ তিনি বলেন, ‘আমি এও জানি, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষায় আপনারা ফেসবুকের সঙ্গে কতটা সম্পৃক্ত।’
তথ্যসূত্র: রোর বাংলা, সিএনএন, গার্ডিয়ান